এখনও আতঙ্ক কাটেনি গল্ফ গার্ডেনে নিগৃহীতা মহিলার

এখনও আতঙ্ক কাটেনি গল্ফ গার্ডেনে নিগৃহীতা মহিলার

এখনও আতঙ্ক কাটেনি গল্ফ গার্ডেনে নিগৃহীতা মহিলারঘটনার চারদিন পরেও আতঙ্ক কাটেনি। গল্ফ গার্ডেন গণধর্ষণকাণ্ডে  মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও এখনও অধরা বাকিরা। আজই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন  নিগৃহীতা মহিলা। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা।

তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ভাবতে পারছেন না নিগৃহীতা মহিলার স্বামী। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নিরাপত্তার অভাববোধ করায় প্রশাসনের সাহায্য চাওয়ার কথাও ভাবছেন নিগৃহীতার স্বামী। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে যাদবপুর থানার পুলিস। 

এদিকে মঙ্গলবার ক্যামেরার সামনে মুখ খোলেন গল্ফ গার্ডেন গণধর্ষণকাণ্ডে নিগৃহীতা মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধেয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছেলের ওষুধ কিনতে যাওয়ার সময় তিন জন যুবক তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। জোর করে এলাকার একটি ঘরে ঢুকিয়ে স্থানীয় এক যুবক তাঁকে ধর্ষণ করে বলে জানিয়েছেন মহিলা।

শুক্রবার ভর সন্ধেতে টালিগঞ্জের আনোয়ার শাহ রোড এলাকায় ওই মহিলাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দার জানিয়েছেন সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ অসুস্থ সন্তানের জন্য ওষুধ কিনতে বেড়িয়েছিলেন ওই মহিলা। তখনই তাঁকে তুলে নিয়ে যায় জনা ছয় দুষ্কৃতী। একটি ফাঁকা গুমটি ঘরে নিয়ে গিয়ে মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ। রাত আটটা নাগাদ ওই গুমটি ঘর থেকেই মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল থেকেই মূল অভিযুক্ত শরিফ আলিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে ক্ষিপ্ত জনতা। তাকে স্থানীয় একটি ক্লাবে আটকে রেখে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ খবর দেওয়া হয় যাদবপুর থানায়। পরে রাত নটা নাগাদ ঘটনাস্থলে এসে শরিফ আলি ওরফে চিনুকে আটক করে পুলিস।


প্রথমে শারীরিক পরীক্ষার জন্য এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আক্রান্ত মহিলাকে। তবে জখম গুরুতর হওয়ায় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ চিত্তররঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ধর্ষিতাকে। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিত্সাও চলছে ওই মহিলার। পুলিসসূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে মূল অভিযুক্ত শরিফ আলির বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনই এলাকায় নির্মাণ কাজের ঠিকা শ্রমিক বলেও জানতে পেরেছে পুলিস। নির্মীয়মাণ বহুতলটির প্রোমোটারের সঙ্গেও একাধিক সময় ঠিকার কাজ করেছে বলেও খবর। স্থানীয় মানুষ আরও অভিযোগ করেন যে ওই গুমটি ঘরটি ওই বহুতলের প্রোমোটারের অফিস হলেও প্রত্যেক সন্ধেয় অভিযুক্তরা ওখানে মদ ও জুয়ার আসর বসত।

যেভাবে ভর সন্ধ্যায় খাস কলকাতার বুকে মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটল, তাতে মহিলাদের নিরাপত্তার প্রশ্নটি আরও একবার সামনে চলে এল। সেই গল্ফ গার্ডেন গণধর্ষণের ঘটনার জেরে প্রকাশ্যে চলে এসেছে এই এলাকায় স্থানীয় যুবকদের দৌরাত্ব্যের কথাও। এলাকার মহিলাদের অভিযোগ, প্রায়শই তাদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় স্থানীয় যুবকরাই নানা অশ্লীল আচরণ করে বলে অভিযোগ। এমনকী ছোট ছোট স্কুলছাত্রীদেরও প্রায়শই উত্ত্যক্ত করা হয় বলেও অভিযোগ।



First Published: Tuesday, August 21, 2012, 18:05


comments powered by Disqus